ঢাকা ০২:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo বেনজীরের রূপগঞ্জের ডুপ্লেক্স বাড়ি প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে যাচ্ছে Logo আজ সাংবাদিক সায়ীদ আবদুল মালিকের পিতা আবুল হাসেম মেম্বারের মৃত্যুবার্ষিকী Logo ‘বিএনপিতে এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে’ Logo জসিমের ‘কেলেঙ্কারির’ বিরুদ্ধে ব্যবস্থার তথ্য জানতে চায় আইডিআরএ Logo নাসিরনগরে নিকাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে অসত্য, বিভ্রান্তিকর সংবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ Logo স্ত্রীর গলা কেটে হত্যাচেষ্টা, স্বামীকে পুলিশে দিলেন স্থানীয়রা Logo গৃহায়ন সংকট নিরসনে প্রকৌশলী জোয়ারদার তাবেদুন নবী’র ভূয়সী উদ্যোগ Logo রাজধানীতে আবারও চিরচেনা যানজট Logo কলেজছাত্রীর আপত্তিকর ভিডিও, গ্রেপ্তার ১ Logo মামুনুল হকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ভর্তি বাণিজ্য: বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি রোধ করুন

নিজস্ব সংবাদ :

নোয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ সালমা আক্তার দ্বাদশ শ্রেণিতে ভর্তি বাণিজ্য করেছেন কোটি কোটি টাকা। এজন্য কলেজের কিছু শিক্ষক নিয়ে তৈরি করেছেন সিন্ডিকেট। অবৈধ সুবিধা নিয়ে এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নির্ধারিত ছাত্রের বাইরে তিনি শিক্ষার্থী ভর্তি করেছেন। বিপুল পরিমাণ ছাত্রের জন্য ক্লাসরুম না থাকায় সিন্ডিকেট সদস্যরা এলাকায় কোচিং বাণিজ্যের সুবিধা নিচ্ছেন। কলেজেরই এক শিক্ষক এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ দেন। গুরুতর এ অভিযোগ সরেজমিন তদন্ত করে সত্যতা মিলেছে। এরপর এই অধ্যক্ষের আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনে প্রকাশ্য অনুসন্ধানের সুপারিশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এটা সম্প্রতি সময়ের ঘটনা।

ভর্তি বাণিজ্য রোধে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও প্রতিবছরই এ বিষয়ে বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়া যায়। কোনো কোনো শিক্ষক যেভাবে ভর্তি বাণিজ্যে মেতে ওঠেন তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

জানা যায়, ভর্তি বাণিজ্যের দায়ে রাজধানীর একটি নামিদামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সই করা এক চিঠিতে ওই শিক্ষককে বরখাস্তের বিষয়টি জানানো হয়।

একইসঙ্গে তাকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, সেই মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রথম শ্রেণিতে ভর্তিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) নির্দেশনা অনুসরণ না করে কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থীকে ভর্তির জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়। জানা যায়, লটারির ফল অনুযায়ী ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য নির্বাচিতদের তালিকায় লটারিতে নির্বাচিত হয়নি এমন কয়েকজন শিক্ষার্থীর নামও পাওয়া যায়। এ নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেন অভিভাবকরা। পরে বিষয়টির তদন্ত করা হয়। তদন্তে কয়েকজন শিক্ষার্থীর অবৈধ ভর্তির প্রমাণ পাওয়া গেছে। একজন দায়িত্বশীল শাখাপ্রধান এবং সিনিয়র শিক্ষক হয়ে এমন কাজ করায় বিভিন্ন মহলে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভর্তি কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। বরখাস্তকৃত শিক্ষককে দেওয়া প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সই করা এক চিঠিতেও উল্লেখ করা হয়েছে, এমন কর্মকাণ্ডে জনসমক্ষে প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।

মূলত সারা বছরই ভর্তি বাণিজ্যসহ নানা রকম অনিয়মের খবর পাওয়া যায়।ভর্তি বাণিজ্যের জন্য একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট রয়েছে। এ সিন্ডিকেট নিয়মবহির্ভূতভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি করে এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় করে থাকে। বস্তুত এটিও এক ধরনের দুর্নীতি। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। বিভিন্ন অজুহাতে এর অতিরিক্ত ফি আদায় করা অনৈতিক। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি নির্দেশনা না মেনে এ চর্চা করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কত অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনা ঘটছে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছ থেকে ‘গলাকাটা’ ফি আদায় বন্ধ করাসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি রোধে সরকারি তদারকি আরও জোরদার করা প্রয়োজন। অভিভাবকদেরও উচিত দুর্নীতিবাজ শিক্ষকদের বিষয়ে সোচ্চার হওয়া।

আকতার হোসেন সাদ্দাম

সম্পাদক- রেনেসাঁ

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

Dainik Renaissance

আমাদের ওয়েসাইটে আপনাকে স্বাগতম। আপনাদের আশে পাশের সকল সংবাদ দিয়ে আমাদের সহযোগীতা করুন
আপডেট সময় ০২:৫২:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৪
১৩০ বার পড়া হয়েছে

ভর্তি বাণিজ্য: বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি রোধ করুন

আপডেট সময় ০২:৫২:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৪

নোয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ সালমা আক্তার দ্বাদশ শ্রেণিতে ভর্তি বাণিজ্য করেছেন কোটি কোটি টাকা। এজন্য কলেজের কিছু শিক্ষক নিয়ে তৈরি করেছেন সিন্ডিকেট। অবৈধ সুবিধা নিয়ে এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নির্ধারিত ছাত্রের বাইরে তিনি শিক্ষার্থী ভর্তি করেছেন। বিপুল পরিমাণ ছাত্রের জন্য ক্লাসরুম না থাকায় সিন্ডিকেট সদস্যরা এলাকায় কোচিং বাণিজ্যের সুবিধা নিচ্ছেন। কলেজেরই এক শিক্ষক এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ দেন। গুরুতর এ অভিযোগ সরেজমিন তদন্ত করে সত্যতা মিলেছে। এরপর এই অধ্যক্ষের আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনে প্রকাশ্য অনুসন্ধানের সুপারিশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এটা সম্প্রতি সময়ের ঘটনা।

ভর্তি বাণিজ্য রোধে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও প্রতিবছরই এ বিষয়ে বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়া যায়। কোনো কোনো শিক্ষক যেভাবে ভর্তি বাণিজ্যে মেতে ওঠেন তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

জানা যায়, ভর্তি বাণিজ্যের দায়ে রাজধানীর একটি নামিদামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সই করা এক চিঠিতে ওই শিক্ষককে বরখাস্তের বিষয়টি জানানো হয়।

একইসঙ্গে তাকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, সেই মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রথম শ্রেণিতে ভর্তিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) নির্দেশনা অনুসরণ না করে কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থীকে ভর্তির জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়। জানা যায়, লটারির ফল অনুযায়ী ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য নির্বাচিতদের তালিকায় লটারিতে নির্বাচিত হয়নি এমন কয়েকজন শিক্ষার্থীর নামও পাওয়া যায়। এ নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেন অভিভাবকরা। পরে বিষয়টির তদন্ত করা হয়। তদন্তে কয়েকজন শিক্ষার্থীর অবৈধ ভর্তির প্রমাণ পাওয়া গেছে। একজন দায়িত্বশীল শাখাপ্রধান এবং সিনিয়র শিক্ষক হয়ে এমন কাজ করায় বিভিন্ন মহলে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভর্তি কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। বরখাস্তকৃত শিক্ষককে দেওয়া প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সই করা এক চিঠিতেও উল্লেখ করা হয়েছে, এমন কর্মকাণ্ডে জনসমক্ষে প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।

মূলত সারা বছরই ভর্তি বাণিজ্যসহ নানা রকম অনিয়মের খবর পাওয়া যায়।ভর্তি বাণিজ্যের জন্য একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট রয়েছে। এ সিন্ডিকেট নিয়মবহির্ভূতভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি করে এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় করে থাকে। বস্তুত এটিও এক ধরনের দুর্নীতি। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। বিভিন্ন অজুহাতে এর অতিরিক্ত ফি আদায় করা অনৈতিক। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি নির্দেশনা না মেনে এ চর্চা করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কত অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনা ঘটছে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছ থেকে ‘গলাকাটা’ ফি আদায় বন্ধ করাসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি রোধে সরকারি তদারকি আরও জোরদার করা প্রয়োজন। অভিভাবকদেরও উচিত দুর্নীতিবাজ শিক্ষকদের বিষয়ে সোচ্চার হওয়া।

আকতার হোসেন সাদ্দাম

সম্পাদক- রেনেসাঁ